Ads Top

ছোট্ট ছুটিতে হঠাৎ হিমালয়ের কোলে

 

ছোট্ট ছুটিতে হঠাৎ হিমালয়ের কোলে

অন্য রুট, ২১/১০/২০২৩ : কাজের ফাঁকে একটা ছোট্ট ছুটি পেয়ে ছুটে গিয়েছিলাম পাহাড়ে, প্রকৃতির কোলে ফের একবার হারিয়ে যাব বলে। হিমালয়ের কোলে বসে ফুসফুস ভর্তি সতেজ বাতাস ভরে নেওয়ার কি যে ফুর্তি তা শহুরে মানুষ ছাড়া আর কেউ জানে কি ! ছোট্ট ছুটে এবারের গন্তব্য ছিল শিলিগুড়ি শহরের কাছেই পাহাড়ের কোলে দুধিয়া নামের একটি অল্পচেনা জায়গায়।

শিলিগুড়ি শহর থেকে মেরেকেটে খুব বেশি হলে ২৩ কিলোমিটার দূরে রয়েছে দুধিয়া। জায়গাটা এক্কেবারে তরাই  অঞ্চলে। শিলিগুড়ি শহর থেকে ছোট্ট একটা ড্রাইভ পৌঁছে দেবে দুধিয়ায়। শিলিগুড়ি থেকে মাটিগাড়া হয়ে পথ চলে গিয়েছে পাহাড়ের দিকে। শহরের ব্যস্ততাকে পিছনে ফেলে কিছুটা ফাঁকা জায়গা পার হয়ে পথ গিয়েছে দুধিয়ার দিকে। প্রথমে পড়বে  সেনা ছাউনি আর তার পরেই চারদিকের পরিবেশ হঠাৎ যেন পাল্টে যেতে থাকবে।


চারদিক অসম্ভব চুপচাপ, নিস্তব্ধতাকে দাবিয়ে রাখবে গাড়ির চাকা। মাথার ওপর ঘন নীল আকাশ আর চারদিকে সবুজের হাতছানি। এটা  শুকনা ফরেস্ট রেঞ্জেরই একটা অংশ। অরণ্যে প্রবেশ করার আগেই রাস্তার পাশে সবুজ বোর্ড সতর্ক করে বলে দেবে যে, এই পথ দিয়ে বন্য পশুরাও যাতায়াত করে, সুতরাং গাড়ি চালাতে হবে সতর্কভাবে। এর পরেই পথ সর্পিল ভঙ্গিতে কিছুটা ওপরের দিকে ঢাল নিতে শুরু করে। পরিবেশকে আরও রোমান্টিক করে তোলে সবুজ কার্পেটের মত দেখতে চা বাগানগুলো। প্রথমেই যে জনপদটি আসবে, তার নাম গাড়িধুরা। আধা ব্যস্ত ছোট শহর, এখান থেকেই রাস্তা বাম দিকে মোড় নিয়ে নদী পার করে চলে গিয়েছে দুধিয়া হয়ে মিরিকের দিকে, আর একটা রাস্তা গিয়ে মিশেছে কার্শিয়াং শহরে। এই পথ ধরেই অনায়াসে পৌঁছে যাওয়া যায় কার্শিয়ং তথা সিটং -এর দিকে।


গাড়িধুরা থেকে দুধিয়ার পথ কিছুটা উর্দ্ধমুখী। কিছুটা গেলেই পাহাড়ের কোলে ছোট্ট জনপদ দুধিয়া স্বাগত জানাবে পর্যটকদের. একটা অচেনা হিমেল বাতাস জড়িয়ে ধরবে। দুধিয়া দিয়ে বয়ে গিয়েছে খরস্রোতা বালাসন নদী। দার্জিলিংএর  কাছে ঘুমের সন্নিকটে উৎস্য এই বালাসন নদীর, এই অঞ্চল দিয়ে বয়ে গিয়ে শিলিগুড়ির মাটিগাড়া হয়ে মহানন্দা নদীতে গিয়ে মিশেছে। দুধিয়ায় বালাসনের চপলতা দেখার মত, রীতিমত সগর্জনে ঢেউ তুলেছে তার জলে। গোটা উপত্যকা এখানেও চুপচাপ, শুধুমাত্র ঐ বালাসানের গর্জনটুকু ছাড়া। পাশেই রয়েছে সেনা ছাউনি, তাদের চাঁদমারী শব্দ অবশ্য মাঝে মাঝেই কানে ভেসে আসে।  নদীর দুই দিক থেকেই উঠে গিয়েছে পাহাড়। পাহাড়গুলোর মাথায় ভেসে বেড়াচ্ছে মেঘের দল। চারিদিকে জমাট কুয়াশা। এখন থেকে একটা রাস্তা চলে গিয়েছে মিরিকের দিকে, অপর রাস্তাটি দিয়ে নেমে যাওয়া যায় বাগডোগরার দিকে। এই অঞ্চলে বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট রয়েছে, তার মধ্যে কয়েকটা উন্মুক্ত অর্থাৎ ওপেন এয়ার, বেশ লাগে কোনো একটার চেয়ার টেনে বালাসনের বুকে নজর রেখে চা বা কফির পেয়ালায় লম্বা একটা চুমুক দিতে।

এক দিনের ছোট্ট ছুটিতে বাড়তি অক্সিজেন পেতে দুধিয়া অবশ্যই সুন্দর একটি জায়গা। রাত্রিবাসের জন্যে হোম স্টে  বা লজ  পাওয়া যায়. 

No comments:

Aaj Khabor. Powered by Blogger.