Ads Top

পায়ে হেঁটে কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর ভ্রমন দম্পতির

পায়ে হেঁটে কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর ভ্রমন দম্পতির


অন্য রুট (বাংলা), ভ্রমণ সংবাদ, ১৪/০৭/২০২২ : স্রেফ পায়ে হেঁটে দেশের দক্ষিণ প্রান্তের কন্যাকুমারী থেকে উত্তর প্রান্তের কাশ্মীরে চলে গেলেন এক দম্পতি, ফিরলেনও পায়ে হেঁটেই।

কেরালার বাসিন্দা বেণী কোত্তারাটহিল (৫৩) এবং তাঁর স্ত্রী মলি বেণী (৪৬) অসাধ্য সাধন করেছেন। তাঁরা তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারী থেকে পায়ে হেঁটে চলে গিয়েছেন কাশ্মীরে, আবার ফিরেও এসেছেন পায়ে হেঁটেই। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের ১ তারিখে এই দম্পতি কন্যাকুমারী থেকে হাঁটা শুরু করেছিলেন। অভিযান শেষ করেছেন ২০২২ সালের ৩রা জুলাই অর্থাৎ চলতি মাসেই। বেণী দম্পতি মোট ১৭ টি রাজ্যের ওপর দিয়ে হেঁটে গিয়েছেন এবং অভিযান সম্পূর্ণ করতে তাঁরা সাত মাস তিনদিন সময় নিয়েছেন। এই সময়ে তাঁরা কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত হেঁটে গিয়ে আবার ফিরে এসেছেন। বেণী দম্পতি হেঁটেছেন মোট ৮,২৩৬ কিলোমিটার পথ। 


বেণী দম্পতি অন্ধ্রপ্রদেশের স্কুলে একসাথে ১৫ বছর ধরে শিক্ষকতা করে যাচ্ছিলেন, কিন্তু করোনা অতিমারী তাঁদের আলাদা করে দিয়েছিল। তাঁদেরকে ফিরে আসতে হয় নিজেদের শহরে অর্থাৎ কেরালার কোয়াটটামে।  বেণী ভালোমত চাকরি খুঁজে পাচ্ছিলেন না, শেষ পর্যন্ত একটি হাসপাতালে তিনি সিকিউরিটি অফিসারের চাকরি গ্রহণ করেন। সেখানে কাজ করতে করতে তিন লক্ষ্য করেন প্রচুর যুবা প্রতিদিন মারা যাচ্ছে শুধুমাত্র হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে।  যদি একটা হাসপাতালে রোজ এত যুবা  মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়, তাহলে গোটা দেশে কত মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছে এবং মারা যাচ্ছে ! বিষয়টা বেশ ভাবিয়ে তোলে বেনীকে। এই ব্যাপারে দেশজুড়ে সচেতনতা দরকার বলে মনে করেন বেণী। এরপরেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন পায়ে হেঁটে দেশ ঘুরবেন এবং হৃদরোগ সম্বন্ধে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে প্রচার করবেন। 


গত বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে ডিসেম্বর মাসের ১ তারিখে বেণী দম্পতি হাঁটা শুরু করেন। ব্যাগে নিয়ে নেন সামান্য কিছু পোশাক, অন্যান্য সামগ্রী এবং একটা তাঁবু। কন্যাকুমারী থেকে যাত্রা শুরু করে বেশিরভাগ জায়গাতেই তাঁরা মন্দির চত্বরে তাঁবু ফেলে রাত্রিবাস করেন। কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর, এই সুদীর্ঘ যাত্রাপথে তাঁরা প্রচুর সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন, কিন্তু তাতেও সাহস হারান নি তাঁরা, এগিয়ে গিয়েছেন নিজেদের লক্ষ্যে। কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর উপত্যকায় পৌঁছে আবার সেখান থেকে পায়ে হেঁটেই ফিরে এসেছেন কেরালায়। এই যাত্রাপথে তাঁদের সঙ্গী হয়েছিল অর্থকষ্ট ও নানারকম আবহাওয়া, তবে সেইসবও জয় করেছেন বেণী দম্পতি। তাঁদের এই অভিযান তাঁরা তুলে ধরেছেন ইউ টিউবে। তাঁরা সেখানে বার বার বলেছেন, তাঁদের এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য ছিল হাঁটার বিষয়ে মানুষকে অনুপ্রাণিত করা, হৃদরোগ তথা স্বাস্থ্য সম্পর্কে জন সচেতনতা গড়ে তোলা। তাঁরা বলেছেন, এভাবে স্বামী ও স্ত্রী সুদীর্ঘ পথ একসাথে চললে নিজেদের মধ্যে সম্পর্কটা আরও গাঢ় হয়। 


২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে বেণী আরও একটা রেকর্ড করেছিলেন। তিনি সাইকেলে চেপে কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পৌঁছে গিয়েছিলেন এবং ফিরেও এসেছিলেন। বেণী তাঁর সেই অভিযানের নাম দিয়েছিলেন 'কেটুকে '; সেই অভিযানে মোট ৫৮ দিনে ১৩টি রাজ্যের ওপর দিয়ে সাইকেল চালিয়েছিলেন বেণী। এরপর গত বছরের জুলাই মাসেই তিনি তাঁর দ্বিতীয় অভিযানটি করেছিলেন ভারতের বিভিন্ন রাজ্য, ভুটান এবং নেপালে। এর চার মাস পরেই তিনি ও তাঁর স্ত্রী দুজনে একত্রে পায়ে হেঁটে অভিযান করলেন কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত। সেইসঙ্গে জনসচেতনতার কাজ করলেন এবং অনুপ্রাণিত করলেন কোটি কোটি ভারতবাসীকে। 




No comments:

Aaj Khabor. Powered by Blogger.