Ads Top

ঋষি খোলা

ঋষি খোলা


অন্য রুট, 19/10/2021 : উত্তরবঙ্গের পাহাড়ে রয়েছে সৌন্দর্যের খনি। ব্যস্ত জীবন মাত্র দিন দুয়েক বা তিনেকের জন্যে ছেড়ে দিয়ে উত্তরবঙ্গের পাহাড়ের কোলে নিশ্চিন্তে উইকএন্ড কাটিয়ে দেওয়া যায়। আর তাতে পুরো মাত্রায় ফ্রেশ হয়ে ফের কর্মজীবনে ফিরেও আসা যায়।  ঠিক এরকমই একটা ছোট্ট ডেস্টিনেশন হল ঋষি খোলা।

পশ্চিমবঙ্গ আর সিকিমের সীমান্ত দিয়ে আপন মনে বয়ে চলেছে ঋষি খোলা। নেপালি ভাষায় 'খোলা' শব্দটির মানে হল নদী।  ঋষি নদীকে পাহাড়ের মানুষ বেশ ভক্তি শ্রদ্ধা করেন। এই নদী অত্যন্ত পবিত্র নদী। এই নদী আবার নাকি দক্ষিণ থেকে উত্তর দিকে বয়ে  চলেছে, অন্তত এই জায়গাটায়।


ঋষি জায়গাটি অনেকটা নিচে। চারদিকে উঠে গিয়েছে পাহাড়, তাই রজত শুভ্র হিমালয় দেখার কোনো অবকাশ নেই। তবে আছে সব ব্যস্ততা ভুলে সাপ্তাহান্তিক ছুটি কাটানোর অসামান্য অবকাশ। 

পশ্চিমবঙ্গ এবং সিকিমের দিকে উঠে গিয়েছে পাহাড়। ঘন সবুজ বনানিতে ঢাকা সেই পাহাড়। মাঝে তরঙ্গ তুলে মহা কলরবে বয়ে চলেছে ঋষি নদী। প্রচন্ড স্রোতের টান থাকলেও নদীর জল কাঁচের মত স্বচ্ছ। জনের নীচেকার নানা রঙের পাথরগুলোকে স্পষ্ট দেখা যায়। 


ঋষি খোলার পরিবেশ অত্যন্ত শান্ত। কোনো কলরব নেই, কোথাও কোনো ব্যস্ততা ধরা পড়বে না। সময় যেন খানিক থমকে গিয়েছে এখানে। তবে কোলাহল না থাকলেও ঋষি নদীর স্রোতের মূর্ছনা কিন্তু মনকে বিভোর করে রাখবে। জলের মধ্যে লাল কালো ট্রাউট মাছের ঝাঁক নিশ্চিন্তে সাঁতরে বেড়ায়। ওদের কেউ ধরেনা, বিরক্তও করে না।


মাঝে মাঝেই চেনা অচেনা পাখির ঝাঁক অবশ্য তাদের অস্তিত্ব জানান দিয়ে যাবে মাঝে মধ্যেই। কতরকম যে পাখি আছে এখানে সেটা নিজে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। এখানে আছে হিমালয়ান বুলবুল, হোয়াইট ক্যাপড ওয়াটার রেডস্টার্ট, প্লামবিয়স ওয়াটার রেডস্টার্ট, ট্রাই কালার স্রাইক, গ্রীন ম্যাগপাই, গ্রেট বার্বেট এরকম আরও কত প্রজাতি !


ঋষি খোলা জায়গাটি কালিম্পং শহর থেকে 36 কিলোমিটার দুরে রয়েছে, তবে পেডং শহরের খুব কাছে। আবার ঋষি বেড়াতে গিয়ে দেখে নেওয়া যায় মাত্র 14 কিলোমিটার দুরের আরিটার জায়গাটি। পাহাড়ের ওপরে আরিটারে রয়েছে বুট জুতোর মত আকৃতির লামপোখরি (লেক)। পোখরি শব্দটির অর্থ পুকুর বা দিঘি। এখানে বোটিংও করা যায়। ঋষি খোলা থেকেই যে রাস্তাটি পুর্ব সিকিম দিয়ে চলে গিয়েছে, এক সময় এই পথকেই সিল্ক রুট বলা হত। তিব্বতের সাথে এই সিল্ক রুট ধরেই বানিজ্য চলত ভারতীয় ব্যবসায়ীদের। আজ সেই সিল্ক রুট পরিণত হয়েছে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে। 


ঋষি খোলায় থাকার জায়গা সেভাবে এখনও গড়ে ওঠেনি। তবে নদীর পাশেই রিভার ক্যাম্প ও কয়েকটি গেস্ট হাউস ও হোম স্টে রয়েছে। ঋষি খোলায় থাকলে পেডং এবং আরিটার এই দুই জায়গাকেই দেখে নেওয়া যাবে। আবার ইচ্ছে হলে জুলুক, কুপুপ, জেলেপ লা পাস ঘুরেও আসা যায় । ইচ্ছে হলে ঐ পথ ধরেই হিমালয়ের অপার্থিব সৌন্দর্য দেখতে দেখতে ছাঙ্গু লেক ঘুরে একেবারে পৌঁছানো যায় গ্যাংটকে।


ঋষি খোলায় রাত্রিযাপন করতে হলে সেখানে চলে গিয়ে হোমস্টেগুলির সাথে যোগাযোগ করলেই ভাল হবে। ওখানে স্পট বুকিং করা হয়। তাছাড়া যোগাযোগ করতে পারেন ঋষি খোলা হোম স্টে - 8777874236 (TAB এর নম্বর), হোটেল সিল্ক রুট রিট্রিট - 9932828753; এছাড়া পেডং, সিলারি, আরিটার এই জায়গাগুলিতেও রয়েছে বেশ কিছু হোটেল ও হোম স্টে। ঋষি খোলা আসতে হলে শিলিগুড়ি থেকে গাড়ি বুক করে আসতে পারেন। কালিম্পং বা পেডং থেকেও গাড়ি ভাড়া করে আসতে পারেন। পেডং থেকে শেয়ার জীপ পেয়ে যেতে পারেন।



No comments:

Aaj Khabor. Powered by Blogger.