Ads Top

কালিম্পং আর তার আশেপাশে

কালিম্পং আর তার আশেপাশে




অন্য রুট, 20/09/2021 : সপ্তাহান্তে কালিম্পং ভ্রমণ যে কোনো কর্মব্যস্ত মানুষকে বাড়তি অক্সিজেন যোগান দেয়। তিস্তা নদী, পাহাড়, অরণ্য পথ, নানা রকম অর্কিড আর কাঞ্চনজঙ্ঘা নিয়েই ছোট্ট ছুট দিয়ে ছুঁয়ে ফেলা যায় পুরোন পাহাড়ি শহর কালিম্পং শহরটাকে।


কিছুদিন আগেও দার্জিলিং জেলার অন্যতম মহকুমা শহর হলেও বর্তমানে কালিম্পং পৃথক একটি জেলা। কালিম্পং শহর ছাড়াও পেডং,  লোলেগাঁও, লাভা, ঋষপ, ঝান্ডির মত অসাধারন কিছু পর্যটন আকর্ষণ রয়েছে এই জেলায়। তাই বর্ষাকাল বাদ দিয়ে কালিম্পংএ সারা বছর ভীড় থাকে ভ্রমণ প্রিয় মানুষের।


শিলিগুড়ি শহর থেকে জিপ বা গাড়ি ভাড়া করে যাওয়া যায় কালিম্পং শহরে। শেয়ার গাড়ি এবং নিয়মিত বাসও যাচ্ছে শিলিগুড়ি থেকে। ট্রেনে এনজেপি স্টেশনে নেমে শিলিগুড়িতে চলে এসে পৌঁছে যাওয়া যায়, আবার এনজেপি স্টেশনের বাইরে থেকেই গাড়ি পাওয়া যায়। 


শিলিগুড়ি থেকে বেরিয়ে পথ চলে গিয়েছে মহানন্দা স্যাংচুযারি পার করে সেবকে। সেখান থেকে কালিঝোড়া হয়ে তিস্তাবাজার পর্যন্ত তিস্তা নদীকে সঙ্গী করেই এগিয়ে যাওয়া। এরপর তিস্তা বাজারে তিস্তা নদী পার করে পাহাড়ের ওপর দিকে উঠে গিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে যাওয়া যাবে গন্তব্যে অর্থাৎ কালিম্পং শহরে। 


কালিম্পং শহরটি বেশ পুরোন হলেও এখন বেশ জমজমাট। প্রচুর হোটেল আর হোম স্টে রয়েছে থাকার জন্যে। ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে সার দিয়ে অপেক্ষায় গাড়িগুলি সাইট সিয়িং করানোর জন্যে। 

কালিম্পঙ শহর থেকে একটু উঁচুতে রয়েছে একটি সুন্দর ভিউ পয়েন্ট। জায়গাটির নাম দুর্পিন দাড়া। এখানেই রয়েছে একটি মনাষ্ট্রী এবং পাশেই রয়েছে একটি হেলিপ্যাড। হেলিপ্যাড থেকে যেমন শিলিগুড়ি শহরের কিছুটা দেখতে পাওয়া যায়, তেমন তিস্তা নদীর কিছুটাও দেখা যায়। আবার স্বপার্ষদ কাঞ্চনজঙ্ঘার উদ্ভাসিত সৌন্দর্য দেখেও জুড়িয়ে যায় মন প্রাণ। 


কালিম্পং থেকে গাড়ি নিয়ে অনায়াসে চলে যাওয়া যেতে পারে দেল লেক। পাহাড়ের অনেকটা উঁচুতে এখানেই রয়েছে বড়সড় একটি জলাশয়। এখান থেকেই কালিম্পং শহরে পানীয় জল সরবরাহ করা হয়। জলাশয়ের  পাশ থেকেই নীল আকাশে জল ছবির মত আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে হাতছানি দেবে মাউন্ট কাঞ্চনজঙ্ঘা। সে এক অদ্ভুত দৃশ্য ! মাউন্ট কাঞ্চন জংঘার গা ঘেঁসাঘেঁসি করে দাঁড়িয়ে আছে কাবরু নর্থ, কাবরু ডোম, ইয়ালুঙকাং, মাউন্ট পান্ডিম। 


কালিম্পং শহরের অন্যান্য আকর্ষণ (যেমন গ্রাহাম্স হোম ইত্যাদি) দেখে বেরিয়ে পড়তে পারেন পেডং এর উদ্দেশ্যে। পেডংও বেশ পুরোন একটি শহর, তবে জনপ্রিয়তায় কম। পেডং থেকেই সিকিমের দিকে নেমে গিয়েছে কাশিংগঙ ভ্যালি। পেডংএর ক্রস হিল থেকে সিকিমের তিনটি জেলা চাক্ষুষ করা যায়। ক্রস হিলে ফাদার অগাস্টিন এর লাগানো বিশাল সাদা ক্রস নাকি তিব্বত থেকেও দেখতে পাওয়া যায়।  পেডংএই আছে ডামসাঙ ফোর্টের ধ্বংসাবশেষ। রয়েছে সাইলেন্ট ভ্যালি, সিলারি গাঁও, রামিতে ভিউ পয়েন্ট, তিনচুলে ইত্যাদি। কার্গিল যুদ্ধের প্রথম শহীদ ছিলেন এই পেডং এর বাসিন্দা। তাঁর স্মৃতিতেই তৈরি হয়েছে কার্গিল মেমোরিয়াল পার্ক। এখানে রয়েছে একটি সুন্দর মনাষ্ট্রী, যেখানে দেখতে পাওয়া যাবে এক বৌদ্ধ রিমপোচের মমি। এটা কিছু দেখে ফিরতে পারেন কালিম্পং এ। পেডং থেকে কিছুটা নিচে নামলে দেখতে পাওয়া যাবে পবিত্র ঋষি নদী। এই নদীই হল পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমের সীমান্ত। আর রাস্তাটি হল ওল্ড সিল্ক রুট। পেডং থেকেও কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য মুগ্ধ করে দেয়।


কালিম্পং থেকে মাত্র 4 কিলোমিটার দুরে রয়েছে আরও একটি সুন্দর জায়গা, যার নাম চীবো। অরণ্য সংকুল এই পথে যেতে হলে কালিম্পং থেকে গাড়ি ভাড়া করে যেতে পারেন। পাহাড়ের প্রান্তে একাকী চীবো পর্যটকদের অপেক্ষাতেই যেন দিন গোনে।  কাঞ্চনজংঘার অসামান্য রূপ সৌন্দর্য এখান থেকেও দেখা যায়।রাত্রিবাসের জন্যে হোম স্টেও গড়ে উঠেছে চীবোতে। কালিম্পং বেড়াতে এসে চীবো অবশ্যই পর্যটকদের কাছে বাড়তি পাওনা। কালিম্পং ভ্রমণ সাঙ্গ করে অনেক পর্যটক চলে যান লোলেগাঁও বেড়াতে। এই জায়গাটি সম্পর্কে অন্য কোনো একদিন লিখব।


কিভাবে যাবেন : যেকোনো উত্তরবঙ্গ গামী বাস বা ট্রেনে করে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে নেমে সেখান থেকে অথবা শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পং যাওয়ার গাড়ি পেয়ে যাবেন। বাস পাবেন শিলিগুড়ির তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাস থেকে। 

কোথায় থাকবেন : নানান বাজেটের প্রচুর হোটেল আছে কালিম্পং শহরে। রয়েছে হোম স্টেও। অট্রিয়াম পার্ক হোম স্টে - 8116318123, জে পি লজ - 9749387669, দ্য গাফ - 9832155059, হোটেল আবিরা - 8637810907, রক ভিলা হোম স্টে - 8582974586

ট্র্যাভেল এজেন্ট - উইকএন্ডার ট্যুর - 8777716056, সফর ইন্ডিয়া - 7980441040



No comments:

Aaj Khabor. Powered by Blogger.