গাছকে জড়িয়ে ধরার আনন্দ উত্তরাখণ্ডে
অন্য রুট, ভ্রমন সংবাদ, ০৯/০৩/২০২১ : প্রকৃতির মাঝে গেলে কি অসুস্থতা সেরে যায় ? বিজ্ঞানীরা বলছেন,. হ্যাঁ প্রকৃতির মাঝে গেলে অনেক অসুখই সেরে যায়। যে সব মানুষ কংক্রিটের জঙ্গল অর্থাৎ শহরে কেতাদুরস্ত জীবন যাপন করছেন, তাঁদের উচিত মাঝে মাঝেই প্রকৃতির মাঝখানে কয়েকদিন কাটিয়ে নেওয়া। তাহলেই যেমন লাঘব হবে ব্যস্ত জীবনযাত্রার ক্লান্তি, তেমনই শরীরের অনেক যন্ত্রণারও উপশম হবে। এই কারণেই উত্তরাখণ্ডের রাণীক্ষেতের কাছে কালিকা নামে একটি জায়গায় গড়ে উঠেছে ভারতের প্রথম প্রাকৃতিক বনানী উপশম কেন্দ্র।
কি এই প্রাকৃতিক বনানী উপশম কেন্দ্র ? উত্তরাখণ্ডের পাহাড়ী অরণ্যের মাঝে এমন একটি জায়গা তৈরি করা হয়েছে, যেখানে মানুষ সবুজের সাথে মিলেমিশে থাকতে পারবে, সবুজ ঘাসের ওপর খালি পায়ে হাঁটতে পারবে, তৃণভূমির ওপর গাছের ছায়ায় খানিকটা ঘুমিয়ে নিতে পারবে, দুহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরতে পারবে গাছের গুঁড়ি, ইচ্ছে করলে আড্ডাও দিতে পারবে মনোরম পরিবেশের মধ্যে, বুক ভরে দূষণহীন শ্বাস নিতে পারবে, ঘন নীল আকাশ দেখে যতক্ষণ ইচ্ছে উপভোগ করতে পারবে, ঝর্নার জলে গা ভাসিয়ে স্নান করতে পারবে, প্রজাপতির পিছনে দৌড়াতে পারবে, অসংখ্য পাখির কুজন ও কলকাকলি শুনে দিন কাটাতে পারবে, এক পাহাড় থেকে আর এক পাহাড় পর্যন্ত অপার্থিব সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারবে আবার রাতে জোনাকির আলোয় বেশ কিছুক্ষন মায়াবি রাতের জোছনায় অবগাহন করতে পারবে।
এরকমই আয়োজন তৈরি করা হয়েছে উত্তরাখণ্ডের রাণীক্ষেতের কাছে কালিকা গ্রামে। যেখানে গেলে আর ফিরে আসতে মন চাইবে না। 'মানুষের ওপর অরণ্যের প্রভাব' এই বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট গবেষণা করেই উত্তরাখণ্ডের বন দপ্তর এই ধরনের একটি উদ্যোগ নিয়েছে। তবে এই উদ্যোগ ভারতে প্রথম হলেও, এই ধরনের ব্যবস্থাপনা জাপানে চালু আছে, যাকে বলা হয় 'শিনরিন ইয়োকু' বা অরণ্যস্নাত। বন দপ্তর বলেছে, গাছকে জড়িয়ে ধরলে মানব শরীরে একটা ভাল লাগার অনুভূতি আসে, বেশ কিছু হরমোন সক্রিয় হয়ে উঠে, একটা 'ফিল গুড' মানসিকতা নিয়ে আসে। আপনি যদি পাইন গাছের গুঁড়িকে বন্ধু ভেবে কিছুক্ষণ জড়িয়ে ধরেন, তাহলে নাকি শরীরে রক্ত চলাচলও স্বাভাবিক হয়। সব মিলিয়ে অদ্ভুত এক সুখানুভূতি হয়।
No comments:
Post a Comment