রহস্যে ঘেরা মন্দির : ভূত তাড়াতে বালাজি মন্দিরে
![]() |
মেহেন্দিপুর বালাজি মন্দির, রাজস্থান |
অন্যরুট, রাজস্থান, ১১/০১/২০২১ : অন্যরুটের তীর্থ পর্বে আমরা ধারাবাহিকভাবে বেশ কয়েকটি মন্দিরের কথা জানাব, মন্দিরগুলিতে যেমন রয়েছে ভক্তির কথা, তেমন রয়েছে মন্দিরকে ঘিরে অদ্ভুত সব রহস্য। আজকের পর্বে আমরা আলোচনা করব রাজস্থানের এক মন্দিরের কথা। যে মন্দিরে ভক্তেরা যায় শুধুমাত্র ভূত তাড়াতে।
![]() |
বালাজি মহারাজের বিগ্রহ |
রাজস্থানের রাজধানী জয়পুর থেকে ১০৯ কিলোমিটার দূরে করৌলি এবং দৌসা জেলার সীমান্তে অবস্থিত মেহেন্দিপুর বালাজি মন্দির। মন্দিরটির অবস্থান অর্ধেক করৌলি জেলায় আর বাকি অর্ধেক দৌসা জেলায়। বেশ প্রাচীন এই মন্দিরে পূজিত হন হনুমানজি। এই মন্দিরের খ্যাতি দেশজোড়া। একেবারে শুরুতে এই মন্দিরের মহন্ত ছিলেন গণেশপুরীজি মহারাজ আর বর্তমানে মন্দিরের মহন্ত আছেন কিশোরপুরীজি মহারাজ। মন্দিরের নিয়ম কানুন, নিরামিষ আহার এইসব সম্বন্ধে বেশ কড়া বর্তমান মহন্তজি।
![]() |
মন্দিরে ভক্তদের ভীড় |
মেহেন্দিপুর বালাজি মন্দিরে পূজা করা হয় পঞ্চমুখী হনুমান মূর্তির। বোঁদের লাড্ডু বানিয়ে হনুমানজিকে ভোগ দেওয়া হয়। কাছেই রয়েছে অঞ্জনীমাতার মন্দির এবং তিন পাহাড়ের মাথায় রয়েছে কালি মাতার মন্দির। এখানকার বৈশিষ্ট্য হল, এখানে বেশিরভাগ ভক্তের ভীড় হয় ভূত তাড়াবার জন্যে। যখন অন্য কোথাও গিয়ে ভূত তাড়াতে পারে না, তখন ভূতে ধরা মানুষদের নিয়ে আসা হয় এখানে। ভক্তের বিশ্বাস এখানে এলে ভূত পালাবেই। সঙ্কটমোচন সঙ্কট হরণ করবেন।তাই প্রতি মঙ্গলবার এবং শনিবার এই মন্দিরে প্রচন্ড ভীড় হয় এই মন্দিরে।.
![]() |
ভূত তাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে |
তবে মন্দিরে ভূত তাড়ানোর প্রক্রিয়াগুলি দেখবার মত। যেন মনে হয় কাল্পনিক নরকে চলে যেতে হয়। এখানে যাকে ভূতে ধরেছে কখনো তাকে ফুটন্ত জালে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। কখনো তাকে ঘরের ছাদ থেকে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়, কখনো আবার চেন দিয়ে দেওয়ালের সাথে বেঁধে রাখা হয়, আবার কখনো দেওয়ালে মাথায় ঠুকে দেওয়া হয়. যে সব পুরোহিতরা এইসব কাজকর্ম করেন, সেই মুহূর্তে তাঁরা যেন কঠোর এক মানবে পরিণত হন। এইসব কিছুর পর নাকি ভূত পালিয়ে যায়।
![]() |
ভূত ছেড়ে গেল কিনা দেখছেন পুরোহিত |
ভূত একবার ছেড়ে চলে গেলে মন্দিরকে পিছনে রেখে মন্দির ত্যাগ করার নিয়ম, আর মন্দিরের দিকে পিছন ফিরে দেখার নিয়ম নেই। কেননা পিছনে ফিরে দেখলে পিছনে থেকে যাওয়া সেই ভূত যদি আবার তাকে ধরে। রাজস্থানের এই মন্দিরকে ঘিরে যে রহস্য রয়েছে, তা উন্মোচন করতে একবার (২০১৩ সালে), একদল গবেষক গিয়েছিলেন মেহেন্দিপুর বালাজি মন্দিরে।. সেই দলে ছিলেন জার্মানির বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানী, কৃতি ছাত্র, দিল্লী এইমসের মনোবিদরা। কিন্তু তাঁরাও শেষ পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেন নি। রহস্য রহস্যই থেকে গিয়েছে। সেই জন্যেই তো বলা হয়, বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর। (ক্রমশ:)
No comments:
Post a Comment