Ads Top

ডারিংবাড়ি

উইকএন্ড

অন্যরুট, ০২/০১/২০২০ :  ডারিংবাড়ি  :  ওড়িশার ডারিংবাড়ি জায়গাটি খুব সুন্দর। পূর্বঘাট পর্বতমালার ৩০০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থান ওড়িশার অন্যতম  পর্যটনকেন্দ্রের । যাঁরা প্রকৃতির অকৃত্রিম সৌন্দর্য দেখে অনাবিল আনন্দ পেতে চান, অবশ্যই তাঁদের ঘুরে আসা উচিত হবে ডারিংবাড়ি থেকে। ব্রিটিশ আমলে এখানে ডারিং সাহেব থাকতেন, এলাকার শাসন ব্যবস্থা ছিল তাঁর হাতেই। তাঁর নাম থেকেই এই জায়গার নাম হয়েছে ডারিংবাড়ি। 

হাওড়া স্টেশন থেকে দক্ষিণগামী ট্রেনগুলি যাচ্ছে ওড়িশার বহরমপুরে । ডারিংবাড়ি জায়গাটির সবচেয়ে কাছের রেল স্টেশন হল বহরমপুর। এই বহরমপুর থেকেই গাড়ি ভাড়া করে পৌঁছাতে হবে ডারিংবাড়িতে; বহরমপুর থেকে ৫৯ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে সোরাডা  হয়ে  পৌঁছে যাওয়া যাবে ডারিংবাড়িতে, দূরত্ব ১২০ কিলোমিটার। তবে বহরমপুর থেকে ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে ভঞ্জনগর হয়েও যাওয়া যায়, তবে সেক্ষত্রে দূরত্ব বেশি হবে, প্রায় ১৮০ কিলোমিটার, আবার মোহনা হয়েও যাওয়া যায়, সেক্ষত্রে দূরত্ব হবে ১৪০ কিলোমিটার। প্রথম রুটটিই সবচেয়ে ভাল হবে যাওয়ার জন্যে ;

ওড়িশার কান্ধামাল জেলায় অবস্থিত ডারিংবাড়িকে ওড়িশার কাশ্মীরও বলা হয়, শীতকালে এখানকার তাপমাত্রা শূন্যেরও নিচে নামতে দেখা গিয়েছে। এখানে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে উৎকৃষ্ট মানের হলুদ ও আদার চাষ হয়; এখানকার আবহাওয়া এবং প্রাকৃতিক নিসর্গ অপূর্ব। উইক এন্ড ছুটি কাটানোর জন্যে সত্যিই আদর্শ। এই জায়গার অধিকাংশ মানুষ আদিবাসী গোষ্ঠীর। 


ডারিংবাড়ি জায়গাটি পুরোপুরি পাহাড়ি জায়গা। যেদিকেই চোখ যায় বা কেন ঘন অরণ্যে আবৃত পাহাড় আপনাকে দূর থেকে হলেও ডারিংবাড়িতে স্বাগত জানাবে। তাই এখানে এসে শুধুই প্রকৃতির সাথে বন্ধুত্ব হবে পর্যটকদের। এখানে  পাহাড়ের মাথায় রয়েছে একটি হিল ভিউ পার্ক, যেখানে আছে একটি অবজারভেটরি টাওয়ার। সেখান থেকে বসে চতুর্দিকের নির্জন পাহাড়ি অরণ্যের দৃশ্য  মুগ্ধ করবে। এই জায়গাটি ছাড়াও হিল ভিউ পয়েন্ট আর একটি জায়গা যেখান থেকে চারপাশের দৃশ্য দেখে মন ভরে যাবে। আর আছে হারবাল গার্ডেন পিকনিক স্পট, বনৌষধির চাষ হয় এখানে, এই জায়গাটিতে কফির চাষ শুরু হয়েছে। চারপাশের সৌন্দর্য এতটাই মনোরম যে এখানে একটি সংক্ষিপ্ত পারিবারিক পিকনিক করতে পারলে চিরদিন মনে থেকে যাবে।

ডারিংবাড়ির আর এক আকর্ষণ হল মিদুবান্দা জলপ্রপাত। কাছাকাছি পর্যন্ত গাড়ি যায়, তারপর বেশ কিছুটা বাঁধানো পথ ধরে হেঁটে যেতে হবে. রয়েছে বেশ কিছু সিঁড়িও। জলপ্রপাতটি অসাধারন, গভীর অরণ্যের মাঝে লুকিয়ে থাকা সৌন্দর্য আবিস্কার করতে খারাপ লাগবে না; এখানে পাহাড়ের অনেকটা উঁচু থেকে বিশাল জলরাশি নেমে আসছে। নিচটা, যেখানে জল এসে পড়ছে সেখানে তৈরী হয়ে গেছে প্রাকৃতিক সুইমিং পুল. চারদিকে ছাড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য বোল্ডার। পিকনিক করার জন্যে এই জায়গাটি আরও সুন্দর।

এই অঞ্চলে রয়েছে আরও একটি সুন্দর জলপ্রপাত, নাম লুডু জলপ্রপাত, তবে সেখানে পৌঁছনোর জন্যে গাড়ি চলাচলের রাস্তা এখনো তৈরী হচ্ছে। রোমাঞ্চ যাঁদের পছন্দ তাঁরা অবশ্যই যেতে পারেন । ওই পথে পড়বে লাভার্স পয়েন্ট।
ডারিংবাড়ি জায়গাটিতে রাত্রিবাসের জন্যে খুব বেশি হোটেল নেই; তবে যে কয়টি রয়েছে, সেগুলির গুণমান খুব খারাপ নয়; ডিয়ারস ইকো হোম - 94384 22452 (হিল ভিউ পয়েন্টের কাছে), নেচার ভ্যালি ইকো রিসর্ট - 97768 03534, হোটেল ইউটোপিয়া - 70082 40548, হোটেল পদ্মা - 79781 66733, যেহেতু এখানে হোটেল হাতে গোনা, আর পর্যটকের ভিড় থাকে বেশি তাই উচিত হবে আগে থেকেই হোটেলের রুম বুক করে রাখা। 


যাঁরা এখানে হোটেলের রুম বুক করতে পারেন না, তাঁরা সাধারণত গোপালপুরে গিয়ে থাকেন। এটিও খুব সুন্দর পর্যটনকেন্দ্র। পোশাকি নাম গোপালপুর অন সি; একেবারে সমুদ্রের ধারে। সমুদ্র সৈকত ছাড়াও এখানকার লাইট হাউস বেশ ভাল লাগবে।গোপালপুর বিচ ছাড়াও এখানে রয়েছে ধবলেশ্বর বিচ এবং কাছেই রয়েছে ধবলেশ্বর মহাদেব মন্দির। গোপালপুর অন  সি থেকে ডারিংবাড়ির দূরত্ব ১৩৫ কিলোমিটার, গাড়িতে যেতে সময় লাগবে সাড়ে তিন ঘণ্টার মত; তাই ডারিংবাড়িতে হোটেল না পেলেও কুছপরোয়া নেই; চলে আসুন গোপালপুরে, সেক্ষত্রে পাহাড়, অরণ্য আর সমুদ্র, প্রকৃতির তিনটি রূপই উপভোগ করা যাবে।

গোপালপুরের হোটেল - স্বস্তি পাম রিসর্ট - 93380 15588, OTDC পান্থনিবাস - 0680 234 3931, সং  অফ দ্য সি - 98615 35627, হোটেল সি সাঈদ ব্রিজ - 94373 25595, হোটেল সি পার্ল (লাইট হাউস ঘেঁষা) - 0680 234 3557, হোটেল অশোক ইন - 0680 234 3222;   এখানে বেশ কিছু হোটেল রয়েছে। তবু ভিড় এড়াতে আগে থেকেই বুক করে নেওয়া উচিত হবে


No comments:

Aaj Khabor. Powered by Blogger.