Ads Top

রাজস্থান পর্ব - ৩

দেশের ভ্রমণ
আমের ফোর্ট 

অন্যরুট, রাজস্থান পর্ব - ৩, ১০/১২/২০১৯ : আরাবল্লী পাহাড়েরই একটি অংশ চিল কা টিলা। আর এই টিলার ওপরেই রয়েছে জয়গড় ফোর্ট, মূলত আমের দুর্গাকে রক্ষা করার জন্যেই এই দুর্গটি  বানিয়েছিলেন, মহারাজা জয়সিংহ (২য় ); এখান থেকে ময়টা লেকটিও দেখতে পাওয়া যায়; আমের দুর্গ আর জয়গড় দূর্গা প্রায় একরকমই দেখতে, স্থাপত্যও একইরকম, দুই দুর্গের মধ্যে যাতায়াতের সুবিধার অন্য রয়েছে মাটির তলায় সুড়ঙ্গ  পথ; জয়গর দুর্গে রয়েছে বড় এক কামান, নাম জয়বান কামান, সেই সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুই চাকার ওপর কামান ছিল এটি, অনেক যুদ্ধের সাক্ষী সে, তবে এখন নীরব ইতিহাস। 
জয়গড় দুর্গের একাংশ 


আরাবল্লীর একধারে আমের ও জয়গর দুর্গের কাছেই রয়েছে নাহারগড় দুর্গ, একটা সময় এই দুর্গ রাজ্যবাসীর সুরক্ষা বলয় হিসেবে কাজ করত, নাহার শব্দের অর্থ হল বাঘ, দুর্গের আগে নাম ছিল সুদর্শনগড়, কিন্তু লোকমুখে পারে নাম হয়ে যায় নাহারগড়, অর্থাৎ বাঘের  বাস, কিন্তু এখানে কি সেভাবে বাঘের বাস ছিল ! শোনা যায়, এখানে নাহার সিং ভোমিয়া থাকতেন। তাঁর অপমৃত্যু হওয়ার পর থেকেই নাকি তাঁর আত্মাকে অনেকে এখানে দেখতে পেয়েছেন, দুর্গ নির্মাণের কাজেও নাকি সেই আত্মা বাধা দিত; এরপরেই দুর্গের নাম হয়ে যায় নাহারগড়। ভোমিয়ার নামে ভিতরে একটি মন্দির করে দেওয়া হয়েছিল। নাহারগড়  ফোর্ট থেকে জয়পুর শহরের দৃশ্য বেশ ভাল লাগবে। 
নাহারগের ফোর্ট থেকে জয়পুর শহর 

নাহারগড় পাহাড়ের কোলেই রয়েছে মানসাগর লেক, (মানসাগর ড্যাম) আর এর মাঝখানে একটি দ্বীপের মত জল থেকে মাথা তুলে রয়েছে জল মহল প্যালেস। এটিও মহারাজা জয়সিংহের তৈরী, মোট পাঁচতলা প্রাসাদের চারটি তলা জলে ডুবে থাকে যখন লেকে জল বেড়ে যায়, তখন শুধু ওপরের তলটি দেখা যায়. ছাদের ওপর রয়েছে একটি ছত্রী।

জলমহল 

দুর্গগুলি দর্শন হয়ে গেলে এবার জয়পুরের মন্দিরগুলিও এক এক করে দেখে নিতে পারেন, এখানে রয়েছে বিখ্যাত বিড়লা মন্দির, গোবিন্দদেব ঠিকানা মন্দির ইত্যাদি, রয়েছে এলবার্ট হল মিউজিয়াম , চিড়িয়াখানা। 
সময় থাকলে সন্ধ্যের পর বেড়িয়ে কিছুটা শপিং করে নিতে পারেন, জয়পুরে অনেক ভাল ভাল জিনিষ  পাওয়া যায়;
এখনকার বড় বড় পাথর বসানো জুয়েলারি খুব বিখ্যাত, এখানকার লেহেরিয়া শাড়ি, বাঁধনি দোপাট্টা, মীনার কারুকার্য করা ছোট ছোট বাসনপত্র, এমব্রয়ডারি করা বেডশিট, মহিলাদের নাগরাই জুতো যাকে মোঝি বলে, হস্তশিল্পের ব্যাগ, কারুকার্য করা নীল কাঁচের পাত্র, কারুকাজ করা হাতের চুরি ও বালা, ছোট ছোট মূর্তির বেশ কদর রয়েছে। জয়পুরে গেলে এখানকার বিখ্যাত জিভে জল এনে দেওয়া  মিঠাই গেভার  খেতে একেবারেই ভুল করবেন না; শপিং করতে গেলে চলে যেতে হবে  জয়পুরের বাপু বাজারে। 

সন্ধ্যেবেলায় বাপু বাজার 
২২শে ডিসেম্বর জয়পুরে ডিউন্স মিউজিক ফেস্টিভ্যাল উদযাপিত হয় খুব বড় করে, ১৪ই জানুয়ারি এখানে হয় আন্তর্জাতিক ঘুড়ি উৎসব, জানুয়ারির ২৩ তারিখ থেকে ৫ দিন ধরে  রাজস্থানের সাহিত্য উৎসব পালিত হয় জয়পুর শহরেই।
জয়পুরের ঘুড়ি উৎসব 


জয়পুরের কিছু হোটেল - হোটেল রাণী মহল 94140 42958, হোটেল সজ্জন নিবাস 0141 231 1544, হোটেল স্যাভয় 0141 404 0067, হোটেল জয়সিংহ প্যালেস 089528 24774, রাসূল মৃগনায়নি প্যালেস 94142 51471, হোটেল মিল্ক মহল 0141 263 2266, হোটেল হলিডে হোম 93522 38273, কৃষ্না প্যালেস 094143 11252, হোটেল কল্যাণ 93145 01591 ইত্যাদি। 

জয়পুরে সাইট সিয়িংয়ের জন্যে যে হোটেলে থাকবেন তারাই ব্যবস্থা করে দেবে, তবু কিছু নম্বর দিয়ে রাখলাম, কার রেন্টাল 85598 0920, রাজপুতানা ট্যুরস 94140 55932, জয়পুর সাইটসিয়িং ট্যুরস 99292 02873, রাজপুতানা ক্যাবস  99283 99846. এছাড়া স্ট্যান্ড থেকে অটো  রিক্সাও  রিজার্ভ করে নিতে পারেন।জয়পুরের সরকারি ট্যুরিস্ট ইনফরমেশন সেন্টার - 0141 515 5100 (চলবে)



বেড়াতে যাওয়ার আগে যেকোনো তথ্য জানতে চাইলে What's App করুন ৯৮০৪২১৯০৪১ নম্বরে।



No comments:

Aaj Khabor. Powered by Blogger.