Ads Top

দার্জিলিং পর্ব - ৪

কুয়াশা ঘেরা জোর পোখরি লেক 

অন্যরুট, দার্জিলিং পর্ব - ৪, ০৭/১২/২০১৯ : গতকাল আমরা লেপচা জগৎ, সুখিয়া পোখরি  ও  জোর পোখরি ভ্রমন করেছি। আজ যাব মিরিকের পথে, ঐ ঋষি রোড ধরেই। এই পথে বনাঞ্চল অনেক বেশি তাই গোটা রাস্তাটাই যেন আরও বেশি করে মোহময় বলে মনে হয়, শুধু তাই নয় এই পথে যেতে গেলে অনেকটা অংশ পড়বে প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপাল সীমান্তের ধার  ঘেঁষে, পথ চলতে চলতেই বার বার নেপালের পাহাড়গুলো হাতছানি দিয়ে ডাকবে, মনে  হবে একবার অন্তত যেতে হবে নেপালের পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে। পাহাড়ের গা ঘেঁষে রয়েছে বেশ কিছু চা  বাগিচা, কমলালেবুর অরণ্য এবং ছোট ছোট পাহাড়ি জনপদ, গোটা এলাকাটাই যেন সুন্দর এক পোস্ট কার্ড।
কাঞ্চনজংঘা 

পথে পড়বে  সীমানা গ্রাম এবং সীমানা ভিউ পয়েন্ট। পাহাড়ের চূড়া থেকে নেপালের গোটা উপত্যকাটি এক নি:শ্বাসে দেখে ফেলার এই অবসরটুকু কিছুতেই ছাড়া যাবে না; সবচেয়ে বেশি অবাক হবেন যখন আপনার গাড়ির ড্রাইভার আপনাকে বলে দেবেন, যেখানে আপনি দাঁড়িয়ে আছেন সেই জায়গাটিই নেপালে পড়ছে, অর্থাৎ আপনি দাঁড়িয়ে আচ্ছেন নেপালের মাটিতেই। সীমানা ভিউ পয়েন্টের কাছাকাছি রয়েছে বেশ কয়েকটি দোকান, যেখানে একটু জিরিয়ে নেওয়ার অছিলায় মোমো বা নুডলস খেয়ে উদরপূর্তি করা যেতেই পারে। সীমানা ভিউ পয়েন্ট ছেড়ে চলে যেতে ইচ্ছে না করলেও মিরিক পৌঁছনোর তাগিদে পথে নামতেই হবে; 
মশগুল নিজেদের মধ্যেই 

এই পথে আর এক দ্রষ্টব্যঃ হল পশুপতি বর্ডার মার্কেট। জায়গাটি সিমানা  ভিউ পয়েন্টের কাছেই অবস্থিত। একটি বড় তোরণে লেখা রয়েছে ওয়েলকাম টু নেপাল। আপনার গাড়ি কিন্তু তোরণের এপাশেই দাঁড়াবে। পরিচয় পত্র দেখিয়ে তোরণ পার করে হেঁটে সামান্য এগোলেই আপনি প্রবেশ করবেন পশুপতি মার্কেটে। একের পর এক দোকান রয়েছে এখানে, যেখানে পারফিউম থেকে শুরু করে নানান বিদেশী জিনিসপত্র কিনতে পারা যায়; রয়েছে বিদেশী জ্যাকেট, জামা কাপড়, জুতো, ক্যামেরা ও ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রীর  সম্ভার। 
পসরা সাজিয়ে দুপুরের বিকিকিনি 

অবশ্য এখন সব ভরে গিয়েছে চীন পন্যে; রেস্টুরেন্টও রয়েছে বেশ কয়েকটি। যেকোনো একটিতে ঢুকে নেপালি খানা চেখে দেখতেই পারেন। এই যে নিজের পরিচয় পত্র দেখিয়ে আপনি সোজা ঢুকে গেলেন নেপালের মধ্যে, এটা  শুধুমাত্র ভারতীয় ও নেপালি নাগরিকদের জন্যেই  অনুমতি দেওয়া হয়, কোনো বিদেশিকে এভাবে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না; 
পশুপতি মার্কেট বেড়ানো হয়ে গেলে এবার মিরিকের পথ ধরুন, মিরিক আর মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে। 
পশুপতি মার্কেটের তোরণ 

যত নিচের দিকে নামতে থাকবেন ততই ঢেউ খেলানো সবুজ চা বাগিচা নজরে আসতে থাকবে। এরকমই সুন্দর একটি চা বাগান হল গোপালধারা টি এস্টেট। নির্জন পাহাড়ি বাঁকে একটু দাঁড়িয়ে যান, বিকেলের পড়ন্ত রোদে এক বুক অক্সিজেন নিয়ে দেখুন রূপসী ধরিত্রীর কত শত রূপ ! এই চা বাগান অঞ্চলের উপত্যাকার সৌন্দর্য্য যে কোনো মানুষকে মুগ্ধ করবে নিমেষে। এখানেই দেখতে পাবেন দুই একটি চায়ের স্টল রয়েছে, যেখানে পাবেন এই গোপালধারা চা বাগানেরই গ্রিন টি; স্বচ্ছ কাপে লিকার চায়ে এক চুমুক দিয়ে দেখুন, তৃপ্ত হবেন, এখানকার চা বিদেশে রপ্তানি হয়;  এবার পথ ধরুন মিরিকের। 
কুয়াশার রহস্যে মোর গোপালধারা চা বাগান 

মিরিক পৌঁছেই আপনার প্রথম কাজ হল হোটেলে চেক ইন করে নেওয়া। তারপর একটু ফ্রেশ হয়ে মিরিক লেকের ধারে এসে জমিয়ে আড্ডা দেওয়া। মিরিকের সাইট সিয়িং হবে আগামীকাল।(চলবে)

No comments:

Aaj Khabor. Powered by Blogger.