Ads Top

রাজস্থান - পর্ব ৪

আজমের দরগা 

অন্যরুট, ২০/১২/২০১৯ , রাজস্থান - পর্ব ৪ : জয়পুর থেকে আজমের যেতে সময় লাগে কম বেশি আড়াই ঘণ্টা, দূরত্ব ১৩৫ কিলোমিটার। জয়পুর বাস টার্মিনাস থেকে অহরহ বাস যাচ্ছে আজমেরের পথে; জয়পুরের হোটেলে প্রাতরাশ সেরেই রওনা হয়ে যাওয়া উচিত হবে আজমেরের  উদ্দেশ্যে ;
 দেশের ভ্রমন
রাতের আলোয় আজমের দরগা 

আজমেরের  প্রধান দ্রষ্টব্যঃ হল আনা  সাগর লেকের কাছে আজমের শরীফ দরগা। এখানে রয়েছে সুফী সাধু গরিব নওয়াজের পবিত্র মাজার। দেশ থেকে তো বটেই, গোটা পৃথিবী থেকে এখানে মানুষ আসেন নিজেদের মনোস্কামনা পূর্ণ করতে। সুফী সাধু মাইনুদ্দিন চিস্তী জন্মগ্রহন করেছিলেন  ইরানে, সমগ্র দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় ভ্রমন করেছিলেন;  আজমেরে তিনি পরলোকে গমন করেন, তারপর তারাগড়  পাহাড়ের  নিচে এখানেই তাঁকে সমাধিস্ত করা হয়েছিল এবং ১৩৩২ সালে তৎকালীন দিল্লীর সুলতান মহম্মদ বিন তুঘলক আজমেরে তাঁর মাজারটি নির্মাণ করে দিয়েছিলেন। আজমের শরীফ দরগা সেন্ট্রাল আজমের রেল স্টেশন থেকে দুই কিলোমিটার দূরে রয়েছে। 
তারাগড় ফোর্ট 

দরগার কাছেই রয়েছে ১৩ কিলোমিটার বিস্তৃত আনা সাগর লেক, মহারাজা পৃথ্বীরাজ চৌহানের পিতামহ অর্ণ রাজা প্রজাদের জন্যেই এই দীঘি খনন করেছিলেন। এখান থেকে সূর্যাস্ত বেশ মনোরম। আজমেরে রয়েছে আধাই  দিন কা ঝোপড়া, ভারতের প্রাচীনতম মসজিদগুলির অন্যতম, তবে জানা যায় এটি আসলে একটি সংস্কৃত কলেজ ছিল একসময়, ভিতরে এখনও রয়েছে দেবী সরস্বতীর একটি মন্দির। কুতুবুদ্দিন আইবক এখানে মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। আজমেরে মুঘল সম্রাট আকবর একটি প্রাসাদ তৈরী করেছিলেন, সেটি এখন অবশ্য সরকারি মিউজিয়াম হয়ে গিয়েছে। আজমেরে  কয়েকটি জৈন মন্দির রয়েছে, দেখে নেওয়া উচিত হবে এক এক করে; এছাড়াও তারাগড় পাহাড়ের মাথায় উঠে দেখে নিতে পারেন তারাগড় দুর্গের ধ্বংসাবশেষ। দুর্গ এলাকা থেকে প্রাকৃতিক দৃশ্যও ভাল লাগবে।
 
আনা সাগরে সূর্যাস্ত 
আজমেরে  একটি রাত্রি যাপন করে পরের দিন চলে যান পুস্কর দেখতে।  আজমের থেকে পুষ্করের দূরত্ব  সামান্য, ১৫ কিলোমিটার, যেতে সময় লাগবে ৪৫ মিনিটের মত; এখানে পুস্কর লেকের কাছেই রয়েছে ব্রম্ভা  মন্দির। লেকের জলে স্নান সেরে পুজো দিয়ে নিতে পারেন।  স্নান করার জন্যে এখানে বেশ কয়েকটি ঘাট রয়েছে। আমাদের দেশে খুব কমই রয়েছে সৃষ্টিকর্তা ব্রম্ভার মন্দির, তার মধ্যে এটিই প্রধান। পুস্করে রয়েছে আরো কিছু মন্দির, যেমন বরাহ মন্দির, গায়ত্রী মন্দির, পাহাড়ের মাথায় সাবিত্রী দেবীর  মন্দির (সিঁড়ি ভেঙে পাহাড় চড়তে  কষ্ট হলে রোপওয়েতে  যান). যদি পুস্করে রাত্রিবাস করতে না চান, বা ফের এক রাত্রি আজমেরে না থাকতে চান তাহলে পুস্কর দর্শন করতে খুব বেশি সময় নেবেন না; কেননা আপনাকে এখান থেকে যেতে হবে উদয়পুরের পথে; 
পুস্করে ব্রম্ভা মন্দির 

পুস্কর থেকে উদয়পুরের দূরত্ব ২৭৭ কিলোমিটার। সময় লাগে প্রায় সাড়ে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা, মাঝে পড়বে চিতোর  গড়।  পুস্কর থেকে সরাসরি চিতোরে  গিয়েও রাত্রিবাস করা যায়, তারপরের  দিন পৌঁছে যেতে পারেন উদয়পুর। 
সাবিত্রী দেবীর মন্দির 

আজমীরের হোটেল - হোটেল আজমের ইন - 0145 266 5551, হোটেল রাজ প্যালেস - 98291 01932, হোটেল ফরচুন প্লাজা - 0145 242 2888, অজন্তা  হোটেল - 0145 262 9318, হোটেল রিগাল - 99298 03818, হোটেল আজমের - 88756 12994 আজমেরে  নানারকম দামের হোটেল রয়েছে। ওপরের এই হোটেলগুলির দাম মোটামুটি ৮০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে। তবু যাওয়ার আগে রেট যাচাই করে নেবেন। রাজস্থানের এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় যাওয়ার জন্যে প্রচুর বাস রয়েছে। রেড বাস রয়েছে, সেগুলিতে  ফোনেও আসন বুক করে নেওয়া যায়; (চলবে)

No comments:

Aaj Khabor. Powered by Blogger.