উইকএন্ড : বিচিত্রপুর
উইক এন্ড : অন্য রুট, ২৪/১১/২০১৯ : শহরের যান্ত্রিক জীবন যাপন যদি মাত্র ২ রাত্রি ও তিনদিনেই ভুলতে চান, তাহলে এমন একটা জায়গা বেছে বেওয়া উচিত যেখানে থাকবে না কোনো কোলাহল, থাকবে না ব্যস্ততা, যেখানে থাকবে না কোনো কাজের চাপ বা টেনশন, তাহলে কি থাকবে ? থাকবে শুধুই ছুটির অবসর, প্রকৃতি আর আপনি। ব্যাস তাহলেই চলবে।
সপ্তাহান্তের এবার যে গন্তব্যের খবর দেব, তা হল ওড়িশার বালাসোর জেলার বিচিত্রপুর। খুব সহজেই আপনি হাজির হয়ে যেতে পারবেন এই উইক এন্ড ডেস্টিনেশনে।
কি ভাবে যাবেন : কলকাতা থেকে বিচিত্রপুরের দূরত্ব ১৯৪ কিলোমিটার, গাড়ি নিয়ে সহজেই চলে যেতে পারবেন, আবার বাসে যেতে হলে প্রথমেই চলে যেতে হবে দিঘায়, দিঘা থেকে বিচিত্রপুরের দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার। এছাড়া যেতে পারেন ট্রেনে চেপে। দিঘা স্টেশনে ট্রেন থেকে নামুন, তারপর বাইরে এসে অটো রিক্সায় চেপে আধ ঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছে যাবেন বিচিত্র পুরে। (গাড়ি ভাড়া দিঘা - বিচিত্রপুর ৪০০/-) জায়গাটি পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ও ওড়িশা রাজ্যের বালাসোর জেলার সীমান্ত।
কি কি করবেন : বিচিত্রপুরের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হল এখানকার ম্যানগ্রোভ অরণ্য, যা বালাসোর ম্যানগ্রোভ রিজার্ভের অধীনে পড়ে । সুবর্ণরেখা নদী এখানে বঙ্গোপসাগরে এসে মিশেছে। বিচিত্রপুরে সরকারি আয়োজনে রয়েছে মোটর চালিত বোটিংয়ের সুব্যবস্থা। মোট এক ঘণ্টার রাইড , প্রথমে খাঁড়ি পথে কিছুক্ষন ভ্রমনের পর বোট এসে পরবে ম্যানগ্রোভ অঞ্চলে। শ্বাসমূল গাছগুলি দেখতে যেন সেই সুন্দরবনের মত; গাছের যে কতরকম আকৃতি রয়েছে, তা যেন এখানে না এলে বোঝা যায় না; জোয়ারের সময় এই এলাকায় সমুদ্রের জল ভরে যায়;
বোট এবার যাবে সমুদ্রের দিকে মোহনার পানে। ভাঁটার সময় সীবীচের অনেকটা অংশ দেখা যায়, স্নানও করা যায়, সৈকতের ওপর ইতস্তত ঘুরে বেড়ায় লাল লাল কাঁকড়া। অযত্নে পরে থাকে বড় বড় ঝিনুক আর শাঁখ। সামনে দিগন্তে গিয়ে মিশেছে নীল সমুদ্র। তবে এখানে কোনো কোলাহল নেই; ভিড় নেই;
দিঘা বা মন্দারমানিকে এড়িয়ে দুটো দিন ভিড় বর্জিত হয়ে প্রকৃতির সাথে সময় কাটাতে মন্দ লাগবে না; কাছাকাছি রয়েছে ইসকন মন্দির, ওড়িশার মন্দিরগুলির আদলে তৈরি, ঘুরে নিতে পারেন সেখান থেকে, এক বিকেলে চলুন বিখ্যাত চন্দনেশ্বর শিব মন্দির দেখতে।
কোনোদিন চলে যান কাজু বাদামের চাষ দেখতে। কখনো চলে যান তালসারিতে। পছন্দ মত মাছ কিনে নিয়ে আসতে পারেন তালসারির সৈকত মাছ বাজার থেকে, দেখবেন এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা হবে এই ভ্রমণে গিয়ে।
কোথায় থাকবেন - ওড়িশা পর্যটন উন্নয়ন নিগম পরিচালিত - বিচিত্রপুর নেচার ক্যাম্প - নির্জন ঝাউ গাছের জঙ্গলে রয়েছে সরকারি এই অতিথি নিবাস, রয়েছে বেশ কিছু কটেজ, ভাড়া ৩৮৯৪ টাকা (থাকা ও খাওয়া সমেত)। ব্যবস্থাপনা বেশ ভালো। কলকাতার ওয়েলিংটন এলাকায় উৎকল ভবনে বুকিংয়ের জন্যে খোঁজ নিতে পারেন। কলকাতার টেলিফোন নম্বর - ২২৪৯ ৩৬৫৩;
বোট ভাড়া - ৬ সিটার বোটের ভাড়া ১০০০/-, আর ৮ সিটার বোটের ভাড়া ১২০০/-
সকাল সাড়ে আটটা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত বিভিন্ন ট্রিপে বেড়ানো যায়; এক একটা ট্রিপ ১ ঘণ্টা করে হয়;
প্রতি সোমবার নৌকার ট্রিপ বন্ধ থাকে। মোহনার দিকে জালের গভীরতা বেশি থাকে, তাই নৌকা একটু বেশি দোলে, সেখানে কোনো রকম ঝুঁকি নেওয়া উচিত হবে না; (একেবারে মোহনা পর্যন্ত যেতে মাঝি ভাই কিছু অতিরিক্ত চেয়ে নেন) ;
No comments:
Post a Comment