দেশের ভ্রমন : আন্দামান - পর্ব - ৪
![]() |
আন্দামানে প্রকৃতির দরবারে |
অন্য রুট : ২৬/১১/২০১৯ : পর্ব ৩ : গতকাল আন্দামানের মাটিতে পা রেখেই কোরবিন্স কোভ আর সেলুলার জেল দেখে নেওয়া হয়েছিল। আজ পোর্ট ব্লেয়ারের অন্য্ দিকটাও একটু ঘুরে দেখে নেওয়া যাক;
প্রথমেই চলুন সমুদ্রিকা নেভাল মেরিন মিউজিয়াম দেখতে। পোর্ট ব্লেয়ারের ডেলানিপুরে টিল হাউসের উলটোদিকে এই মিউজিয়ামটি গড়ে তোলা হয়েছিল সামুদ্রিক পরিবেশ সম্বন্ধে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়িয়ে তোলার জন্যে। মিউজিয়ামটি পরিচালনা করে ভারতীয় নৌ বাহিনী। ভিতরে সংরক্ষিত রয়েছে বেশ কিছু সামুদ্রিক কোষ, প্রচুর প্রবাল ও নানারকম সামুদ্রিক মাছ; মোট পাঁচটি ভাগ রয়েছে মিউজিয়ামের, একে একে দেখে নিন;
![]() |
ভাইপার দ্বীপে হানাবাড়ি |
পোর্ট ব্লেয়ারের ফিনিক্স যেটি থেকে মাত্র ২০ মিনিটের নৌকা যাত্রা আপনাকে পৌঁছে দেবে ভাইপার দ্বীপে। পোর্ট ব্লেয়ারে যখন সেলুলার জেল তৈরি হয়নি, তখন এই ভাইপার দ্বীপের ছোট জেলখানায় রাখা হত রাজনৈতিক বন্দীদেরকে। অর্থাৎ আন্দামানের পুরোন জেল ছিল এটাই। শোনা যায়, আর্চিবল্ড ব্লেয়ার যখন নিজের এইচএমএস ভাইপার জাহাজটি নিয়ে এই দ্বীপের কাছে আসছিলেন তখন তাঁর জাহাজটি এখানে ডুবে যায়; তখন থেকেই এই দ্বীপের নামকরণ হয় ভাইপার দ্বীপ। এই দ্বীপে হানা বাড়ি ছাড়াও আর এক আকর্ষণ হল সুন্দর পরিবেশ, এখানে সপরিবারে পিকনিক করতেই পারেন।
এক দিনে আর নতুন কোনো গন্তব্যে যাওয়া যাবে না; বাকি রায়ে গেল আরো অনেক কিছু এই পোর্ট ব্লেয়ারে। তবু হাতে সময় থাকলে দিনের বাকি সময়টা পোর্ট ব্লেয়ারেই কয়েকটি গন্তব্য দেখে নিন;
![]() |
যেতে যেতে পথে |
এখানে রয়েছে আঞ্চলিক এনথ্রোপলজিকাল মিউজিয়াম (সোমবার বন্ধ),এখানে গেলে আন্দামান ও নিকোবরের ইতিহাস, এখানকার আদিবাসী ও তাদের জীবনযাত্রা, কিভাবে সরকার তাদের উন্নয়নের কাজ করছে , তাদের সংস্কার, সংস্কৃতি সম্পর্কে সাময়িক ধারণা তৈরি হবে; যেতে পারেন মেরিনা পার্কে, ছোট পার্ক কিন্তু ছোটদের ভাল লাগবে, এখানে বোটিংয়ের ব্যবস্থাও আছে; ছোটদের ভাল লাগার জন্যে রয়েছে গান্ধী পার্ক, যেখানে ছোটদের জন্যে নিরাপদ ওয়াটার গেমস যেমন আছে তেমন আছে ক্যাফেটেরিয়া, রেস্টুরেন্ট, একটি লেক (এই মিষ্টি জালের লেক থেকেই পানীয় জল সরবরাহ করা হয়) ও একটি জাপানি বাঙ্কার ।
![]() |
জাপানি বাঙ্কারের কাছে |
হাডডোর কাছে আছে মিনি জু, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সেখানেও সময় কাটাতে পারেন। পোর্ট ব্লেয়ারের সাদিপুরে কোরবিন্স কোভ রোডের ওপর রয়েছে সায়েন্স সেন্টার দেখে নিতে পারেন সেটিও। আসলে, দিনের এই বেলাটাতে দূরে কোনো জায়গায় যাওয়া ঠিক হবে না, দূরে কোনো জায়গায় যাওয়ার জন্যে যে সময় লাগবে, সকাল থেকে বড় দুটি জায়গায় ঘুরে আসার পর আর সেটা পাওয়া যাবে না;
![]() |
আবেরদীন ক্লক টাওয়ার |
তাই পোর্ট ব্লেয়ারের মাঝারি আকর্ষণ বা বেড়ানোর জায়গাগুলোতে ঘুরে নেওয়াই ভাল; এরপরেও পোর্ট ব্লেয়ারে বাকি থেকে যায় কয়েকটি দ্রষ্টব্যঃ। যেমন চিড়িয়া টাপু, মুন্ডা পাহাড় বীচ, চথাম শ` মিল, ব্যারন আইল্যান্ড, মাউন্ট হ্যারিয়েট আর তার ফাঁকে ফাঁকে ছোটখাটো জায়গাগুলি যেমন বীর সাভারকার পার্ক, চিলড্রেন্স ট্র্যাফিক পার্ক, রামকৃষ্ণ মিশন ইত্যাদি।
![]() |
ভেতরিমালাই মুরুগান মন্দির |
আগামীকাল বেড়াতে যাওয়া হবে রস আইল্যান্ড, নর্থ বে আইল্যান্ড ও জলি বয় আইল্যান্ডে। তারপরদিন রওনা হওয়া যাবে হ্যাভলকের উদ্দেশ্যে । পোর্ট ব্লেয়ারের বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে মোহনপুরার আবের দীন বাজারে বেশ কয়েকবার ঘোরা হয়ে গিয়েছে, সন্ধ্যে হলে দেখুন আলোর সাজে কিভাবে সেজে উঠেছে আবেরদীন ক্লক টাওয়ার। সন্ধ্যে বেলাতেই একবার যেতে পারেন এখানকার শ্রী ভেতরিমালাই মুরুগান মন্দিরে। ভাল লাগবে। (চলবে)
No comments:
Post a Comment