Ads Top

ভাইজাগ - আরাকু পর্ব ৪

চিত্রকূট  জলপ্রপাত 

অন্যরুট - ২০/১১/২০১৯ : ভাইজাগ - আরাকু পর্ব ৪আজ আমাদের ভ্রমন ভাইজাগ থেকে জগদলপুর। ভাড়া গাড়ির সাথে চুক্তি থাকলে আরাকু ভ্যালি বেরিয়ে নিয়ে সেখান থেকেই সরাসরি জাগদলপুর চলে গেলে সময় বাঁচে অনেকটা। না হলে ভাইজাগ থেকে আরাকুর পথে অনেকটা গিয়ে সেখান থেকেই যেতে হবে জগদলপুরে;  ভাইজাগ থেকে জাগদলপুরের দূরত্ব ২৯৭ কিলোমিটার, গাড়িতে এই পথ যেতে প্রায় ৮ ঘণ্টা সময় লাগে। আরাকু থেকে জাগদলপুরের দূরত্ব ১৮২ কিলোমিটার, গাড়িতে কমবেশি সময় লাগে সাড়ে চার ঘন্টা। গাড়িতে রাজ্যের সীমানা অতিক্রম করতে হবে কেননা ভাইজাগ বা আরাকু অন্ধ্র প্রদেশে আর জগদলপুরের অবস্থান হল ছত্তিশগড়ে।
বিশাখাপত্তনম জংশন স্টেশন থেকে জাগদলপুর যাওয়ার যে ট্রেনগুলি ছাড়ে সেগুলি হল -
তিরথগর জলপ্রপাত 

  • কিরান্দুল এক্সপ্রেস ছাড়ে রাত্রি ৯:৩৫ মিনিটে পৌঁছায় পরদিন ভোর সাড়ে পাঁচটায়।
  • রায়গড় এক্সপ্রেস ছাড়ে রাত্রি ৯:৫৫ মিনিটে জাগদলপুর পৌঁছায় পরদিন সকাল ১০:৩৩ মিনিটে।
  • বিশাখাপত্তনম কিরান্দুল প্যাসেঞ্জার ছাড়ে সকাল ৬:৫০ মিনিটে, জাগদলপুর পৌঁছায় বিকেল ৪:৩০ মিনিটে 
জগদলপুর রেল স্টেশন 

এবার দেখা যাক কি কি দ্রষ্টব্য অপেক্ষা করে রয়েছে জাগদলপুরে -
জগদলপুর ছত্তিশগড় রাজ্যের বস্তার জেলার ছোট একটি শহর, বাস স্ট্যান্ড এলাকা থেকেই গাড়ি ভাড়া করে জগদলপুরের সাইটসিয়িংগুলি দেখে নিতে পারলে ভাল হয়; এই অঞ্চলের শ্রেষ্ঠ আকর্ষণ হল চিত্রকূট জলপ্রপাত। শহর থেকে দূরত্ব ৩৮ কিলোমিটার। ওড়িশার কালাহান্ডি অঞ্চল থেকে ইন্দ্রাবতী নদী পশ্চিম বাহিনী হয়ে চিত্রকূট হয়ে তেলেঙ্গানা রাজ্যে প্রবেশ করেছে, তারপর গিয়ে মিশেছে গোদাবরী নদীতে। চিত্রকূটের অবস্থান কাঙ্গের ভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক বা অভয়ারণ্যে। চিত্রকূট জলপ্রপাতকে ভারতের নায়াগ্রা বলা হয়; প্রায় ১০০ ফুট উঁচু থেকে বিশাল বিস্তৃতি নিয়ে নিচে আছড়ে  পরছে জলরাশি। নিচে যেখানে জলরাশি পরছে, সেখানে বোটিং করার সুযোগ আছে; জলপ্রপাতের কাছে বেশ কয়েকটি প্রাকৃতিক গুহা আছে যেখানে পূজিত হন শিব, পার্বতী, গনেশ। তবে চিত্রকূট সানসেটের সময় বেড়াতে গেলে বেশি ভাল লাগবে। 
কুটুমসর গুহা 

কাঙ্গের ভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক অঞ্চলেই রয়েছে আর একটি সুন্দর জলপ্রপাত, নাম তীরথ গড় জলপ্রপাত। এই জলপ্রপাতের বিস্তৃতি খুব বেশি না হলেও পর্যটক আকর্ষণ কম নয়; কাছাকাছি আছে কুটুমসর গুহা এবং কৈলাস গুহা। কুটুমসর গুহার আকৃতি অনেকটা বোরা গুহার মত, তবে অতটা বড় নয়; কাঙ্গের ভ্যালি অভয়ারণ্যের ভিতরে রয়েছে চারদিকে পাহাড় ঘেরা সুন্দর একটি জলাশয়, নাম ভাইসা ধারা। এখানে গেলে কুমির আর নানারকম কচ্ছপ দেখতে পাওয়া যায়; জায়গাটিও বেশ মনোরম। আর আছে কাঙ্গের  ধারা, ছোট একটি নদী, খুব সুন্দর পিনিক স্পট। জগদলপুর শহরের কাছেই আছে দলপত্ সাগর লেক, বিশাল এই কৃত্রিম লেকের মাঝে আছে একটি দ্বীপভূমি, নৌকা করে যাওয়া যায়, সেখানে আছে একটি শিব মন্দির। এছাড়াও দেখে নিতে পারেন বস্তার প্যালেস বা রাজবাড়ী। রয়েছে দন্তেশ্বরী মন্দির, এখানে দশেরা উৎসব পালিত হয় ধুমধাম করে; রাজবাড়ী চত্বরেই  দন্তেশ্বরী মন্দির ছাড়াও জগদলপুরে রয়েছে বেশ কিছু মন্দির, যেমন  দন্তেশ্বরী মাতার বড় বোন মালভি মন্দিরটি রয়েছে দন্তেশ্বরী মন্দিরের উল্টোদিকে। দন্তেশ্বরী দেবীর ছোট বোন হিংলাজিন মাতার মন্দিরটিও দর্শনীয়, এখানে শক্তির আরাধনা করা হয়; এছাড়াও এখানে রয়েছে ভেঙ্কটেশ্বর বালাজি স্বামীর মন্দির। বরসুর  মন্দিরটি দেখতে হলে যেতে হবে জগদলপুর থেকে ৭৫ কিলোমিটার দূরে, ইন্দ্রাবতী নদীর ধারে  যেখানে রয়েছে মোট ১৪৭টি মন্দিরের কমপ্লেক্স । জগদলপুরে একটি মিউজিয়াম আছে যেখানে গেলে স্থানীয় আদিবাসীদের লোক সংস্কৃতি, পোশাক- আশাক, বাদ্যযন্ত্র ছাড়াও তাদের লোকাচার সম্বন্ধে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে। 
কাঙ্গের ভ্যালি প্রবেশ তোরণ 

জগদলপুরের হোটেল -
  • হোটেল লক্ষী প্যালেস - 089590 95000 (৭০০/-)
  • হোটেল পার্থ - 77822 37612 (১০০০/-)
  • নায়ের গেস্ট হাউস - 81202 99998 (১০০০/-)
  • হোটেল আকাঙ্খা - 87188 44080 (১৮০০/-)
  • হোটেল আনন্দ নিবাস - 77822 22560 (৩০০০/-)
  • নমন হাইটস - 77822 22560 ( ২৬০০/-)
  • গণপতি রিসার্টস - 77822 37919 (৪৩০০/-)
বস্তার  প্যালেস 

এছাড়াও জগদলপুর রেল স্টেশন ও বাস স্ট্যান্ডের কাছে বেশ কিছু বাজেট ক্যাটাগরি হোটেল রয়েছে, গিয়েও রুম বুক করা যায়, তবে দশেরার সময় এখানে বেশ ভিড় হয়, সেই সময় যেতে হলে আগে থেকে হোটেল বুক করে যাওয়াই  ভাল; এখানে যে হোটেলের রেট দেওয়া আছে, তা ঐ হোটেলগুলির ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া। জিএসটি বাদ  দিয়ে, তাই যাওয়ার আগে অবশ্যই সঠিক ভাড়া জেনে নেওয়া উচিত হবে; (চলবে) 

# ভাইজাগ - আরাকু ভ্রমন সম্বন্ধে কোনো প্রশ্ন থাকলে মেল্ করুন - mediaindia24@gmail.com অথবা  nundeez@gmail.com 



  



No comments:

Aaj Khabor. Powered by Blogger.